ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের ক্ষমা নয়, বিচার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে আন্দোলনে নিহত গোলাম রাব্বানীর পিতার হাতে অনুদান তুলে দেওয়ার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন। রাজধানীর শাহবাগে পিজি হাসপাতালের পাশে তাদের পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে রুহুল কবির রিজভী এ অনুদানের টাকা তুলে দেন।
রিজভী বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন যে তারা নাকি আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থক যারা অন্যায় করেনি তাদের প্রতি আমাদের কোন ক্ষোভ নেই কিন্তু যে মহিলা হেলিকপ্টারে ওঠার সময়ও নাকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছেন, আইজিপিকে বলেছেন তোমরা আন্দোলনকারীদের উপর গুলি করো। শুধুমাত্র ক্ষমতার জন্য, রাষ্ট্রকে গ্রাস করার জন্য। এই কোমলমতি শিশুদের রক্ত দেখে যে ব্যক্তি আনন্দিত হন তার কি বিচার হবে না? তার কি শাস্তি হবে না?
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘শেখ হাসিনার কর্মসূচি যারা বাস্তবায়ন করেছে, জুলাইয়ের গণহত্যা যারা করেছে আনিসুল হক আইন মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি সহ আরও কর্মকর্তা যারা নির্দ্বিধায় বাচ্চাদের উপর গুলি চালিয়েছে তাদের কি বিচার হবে না? যে বাচ্চাদের টিফিন হাতে করে স্কুলে যাওয়ার কথা সেই বাচ্চারা একটি ফেরাউনের পতনের জন্য রাস্তায় নেমে এসেছিলেন সেই বাচ্চাদের উপর শেখ হাসিনা নির্দ্বিধায় গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ছিলেন রক্ত পিপাসু একজন নর ঘাতক। আজকে যদি তারা ক্ষমার মধ্যে পড়ে তাহলে তো এই দেশে শুধু গোরস্থান তৈরি হবে এই দেশে একের পর এক কবরস্থান তৈরি হবে।
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার তৈরি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অত্যাচার থেকে আমরা কেউ রেহাই পাইনি। কথায় কথায় মামলা রিমান্ডে নিয়ে নিপীড়ন-নির্যাতন করেছে। শেখ হাসিনার নিপীড়ন থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশনায়ক তারেক রহমান সহ আমরা কেউ বাদ যায়নি। দিনের পর দিন মাসের পর মাস আমাদেরকে রিমান্ডে থাকতে হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘একটি দেশ যে দেশ বিনির্মাণের জন্য ৩০ লক্ষ শহীদ আত্মহুতী দিয়েছে সেই দেশ কি একজন ব্যক্তির কথায় চলবে? আপনারা জানেন গতকাল সংবাদ মাধ্যমে এসেছে শুধুমাত্র সরকারি নতুন যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশ নাম শেখ পরিবারের নামে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম দেয়া হয়েছে হাসিনার বাবার নামে, হাসিনার মায়ের নামে, হাসিনার মামাতো ভাইয়ের নামে, চাচাতো ভাইয়ের নাম এই দেশে কি আর গুণী মানুষ নেই? কাজী নজরুল, জসীমউদ্দীন, বেগম রোকেয়াদের কি এই বাংলার ভূমিতে জন্ম হয়নি? যাদের নামে ব্যাংক ডাকাতের অভিযোগ আছে তাদের নামে হবে সরকারি প্রতিষ্ঠান এটা হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা এত অপরাধ করেছে বলে শেষ করা যাবে না। ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এসবের কি বিচার হবে না?
তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের কাজ করতে দিন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান এ বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন।
এসময় চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, দলের সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ডা. মনোয়ারুল কাদির বিটু, ডা. জাহিদুল কবির, মেহেবুব মাসুম শান্ত, আরিফুর রহমান তুষার উপস্থিত ছিলেন।